ধারাবাহিক প্রতিবেদন (১)
বাংলাদেশ টাইমস্ ২৪
প্রতারণা, জালিয়াতি, অর্থ আত্মসাৎসহ নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে ভাঙ্গা উপজেলা পরিষদ ২০১৯-২০২৪ নির্বাচিত সাবেক চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে তিনি উপজেলা চেয়ারম্যান হওয়ার পর থেকেই কয়েক বছরের মধ্যে তিনি আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়ে গেছেন এমনটাই অভিযোগ করেছেন ভাঙ্গা উপজেলার একাধিক বাসিন্দা।
বাংলাদেশ টাইমস্ এর ধারাবাহিক ৩য় পর্বের অনুসন্ধানে জানা যায়, শেখ হাসিনার আত্মীয় সাবেক সংসদ সদস্য মজিবুর রহমান নিক্সন চৌধুরীর সমর্থনে হাবিবুর রহমান ঘারুয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন করলেও বিপুল ভোটে পরাজিত হন তারপর ভাঙ্গা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সাবেক সংসদ সদস্য নিক্সন চৌধুরী”র সমর্থন নেওয়ার জন্য হাবিবুর রহমান”কে দিতে হয় কোটি টাকা তিনি উপজেলা চেয়ারম্যান হওয়ার পরই দুর্নীতি শুরু করেন তিনি। সারাদেশের উপজেলা চেয়ারম্যানরা সরকার এবং স্থানীয় এমপির কাছ থেকে তেমন কোনো সুযোগ সুবিধা না পেলেও তিনি সংসদ সদস্য নিক্সন চৌধুরীর আর্শিবাদ পূষ্ট হওয়ায় বিভিন্ন উন্নয়ন খাতের কোটি কোটি টাকা কৌশলে হাতিয়ে নিয়ে আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়েছেন সাবেক চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান।
এছাড়াও এমপি কোটার কয়েক টন টিআর কাবিখা সুকৌশলে ভাগবাটোয়ারা করে নেন সাবেক সংসদ সদস্য নিক্সন চৌধুরী ও সাবেক চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান আরো অভিযোগ রয়েছে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের বরাদ্দ নিজের লোকের নামে উত্তোলন করা উপজেলার সমস্ত টেন্ডার মোটা অংকের কমিশন নিয়ে নিজস্ব ব্যক্তিদের পাইয়ে দেয়া বদলি এবং নিয়োগেও এই সাবেক চেয়ারম্যান হাতিয়ে নিয়েছেন কোটি কোটি টাকা দুর্নীতির কোনো কিছুই বাদ দেননি তিনি। যেদিকে তাকানো যাবে, সেদিকেই তার দুর্নীতির দেখা মিলবে। সরকারি গাছ বিক্রি করেও প্রায় অর্ধকোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তিনি।
এছাড়াও ভাঙ্গা উপজেলার একাধিক সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন,সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমানের সময় খাতা কলমে কোথাও কোনো স্বাক্ষর না থাকলেও তার নির্দেশের বাইরে কোনো প্রকল্প বাস্তবায়ন করার সুযোগ নেই কোনো কর্মকর্তার। তিনি সব সময় ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে দুর্নীতি চালিয়ে গেছেন। এছাড়াও যে কোনো উন্নয়ন প্রকল্পের খুব সিক্রেটে তার কমিশন তিনি হাতিয়ে নিয়েছেন।
আরো জানা যায়,ভাঙ্গা উপজেলা সাবেক চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান, উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের আগে ঢাকায় অবস্থিত ক্রয়কৃত জমি রয়েছিল সেই জমি ২০১৬ ইং বছরেই শেয়ারিং সিস্টেমে ডেভলপমেন্ট এর কাছে দিয়ে ১ কোটি টাকা নিয়েছেন সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান আর সেই কোটি টাকা দিয়েই তিনি ৯ নং ঘারুয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন করেছেন কিন্তু কোটি টাকা খরচ করলেও এলাকার জনগণ বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়েছেন নৌকা সমর্থক প্রার্থীর কাছে ।
অনুসন্ধানে আরো জানা যায় ,
সাবেক চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমানের রাজধানীর ফকিরাপুলে রয়েছে আল হাবিব ট্রাভেল এজেন্সি রয়েছে এছাড়াও নামে বেনামে বেশ কয়েকটি জয়েন্ট স্টোক থেকে লিমিটেড কোম্পানি করেছেন এসকল নামবিহীন বিভিন্ন কোম্পানির নামে একাধিক ব্যাংক একাউন্ট করে বিভিন্ন প্রকল্পের দুর্নীতি ও লুটপাটের কোটি কোটি টাকা রেখেছেন বলে সাবেক চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান একটি বিশ্বস্ত সূত্র জানায়।
এছাড়াও চুমুরদি ইউনিয়ন পরিষদের প্রকল্প কুমার নদীর পাড়ে দিয়ে রাস্তার উন্নয়ন প্রকল্প কিন্তু ইউনিয়ন পরিষদ সাবেক চেয়ারম্যান সোহাগ কুমার নদীকে শেষ করতে রাস্তার উন্নয়ন প্রকল্পের নদীর মাটি কেটে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও ইউপি চেয়ারম্যান সোহাগ ইটভাটা মালিকদের কাছে বিক্রি করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন একাধিক সূত্র।
জানা যায়,এই সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যানের নিজস্ব ঠিকাদার মের্সাস আশিক ইমতিয়াজ এন্টাপ্রাইজ আলগী ইউনিয়নের পীরের চর সড়কের ২.৭ কিলোমিটার রাস্তা কার্পেটিংয়ের নিন্মমানের কাজ করায় এনিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) এর কাছে লিখিত অভিযোগ করেন স্থানীয় আলগী ইউনিয়ন পরিষদের বাসিন্দারা ।
বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ খতিয়ে দেখতে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও ইঞ্জিনিয়ারদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ খতিয়ে দেখতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অভিযান করে অভিযোগের নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগের সত্যতা পেয়েছেন বলে জানান দুদক উপপরিচালক (জনসংযোগ) মুহাম্মদ আরিফ সাদেক ।
তিনি আরো জানান, ভাঙ্গা উপজেলার আলগী ইউনিয়নের পীরের চর সড়কের ২.৭ কিলোমিটার রাস্তা কার্পেটিংয়ে কাজ যাচাই-বাছাই করে কার্পেটিংয়ের পুরুত্ব ১০মিলিমিটারও পায়নি দুদক টিম। অথচ শিডিউল অনুযায়ী কার্পেটিংয়ের পুরুত্ব ৪০মিলিমিটার থাকার কথা থাকলেও একজন নিরপেক্ষ প্রকৌশলীর উপস্থিতিতে পরিমাপ করে রাস্তার বিভিন্ন স্থানে কম পুরুত্ব পেয়েছে। প্রাথমিকভাবে অভিযোগের যথার্থতা রয়েছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করেছে এনফোর্সমেন্ট টিম।
স্থানীয় সূত্রে আরও জানা যায়, ২০২১-২২ অর্থবছরে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল দপ্তর পীরের চর সড়কের ২ কিলোমিটার ৭০০ মিটার কার্পেটিং শুরু করে। এ কাজের চুক্তিমূল্য ছিল ২ কোটি ১৮ লাখ টাকা থাকলেও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান”কে মোটা অংকের কমিশন দিয়ে কাজ করায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করে আসছিলেন।
এছাড়াও এই সাবেক চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমানের নিজ গ্রামের ৯ নং ঘারুয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে তার নিজস্ব প্রার্থী”কে দলীয় সিদ্ধান্ত”কে উপেক্ষা করে মুনসুর আহম্মেদ” এর কাছ থেকে কোটি টাকা নিয়ে জয়লাভ করে ঘারুয়া ইউনিয়ন পরিষদের ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট ও বিভিন্ন প্রকল্প ও উন্নয়নের বাজেট একটি অংশ সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান ও ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মুনসুর আহম্মেদ হাতিয়ে নিয়েছেন বলে এমনই একাধিক এলাকাবাসীর অভিযোগের ভিত্তিতে প্রতিবেদক অনুসন্ধান করলে সতত্যা মিলেছে।
এসকল বিষয় নিয়ে কথা হয় টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান,দুর্নীতি রোধে, স্বৈরাচারী আওয়ামী সরকারের অধীনে নির্বাচনী জনপ্রতিনিধিরা তাদের নিজেদের আখের গোছাতে ব্যস্ত ছিলেন জনগণের কথা শুনার মতো তাদের সময় ছিল না তিনি আরো বলেন,দুর্নীতি একটি ব্যাপক শব্দ, বহুল অর্থে উচ্চারিত। দুর্নীতি ম্যাটেরিয়াল ও ইন্টেলেকচুয়াল। অনৈতিক সব কাজই দুর্নীতি। প্রচলিত অর্থে দুর্নীতি বলতে আমরা বুঝি অর্থনৈতিক দুর্নীতি। বাংলাদেশের সর্বগ্রাসী দুর্নীতির ভয়াবহ চিত্র দীর্ঘ দিন ধরে গোটা জাতিকে উদ্বিগ্ন করে রেখেছিলেন সাম্প্রতিক সময়ে পতন হওয়া স্বৈরাচারী আওয়ামী সরকার। সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতি। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ টিআইবি গত দশকে পুনঃপৌনিকভাবে অবিরাম পাঁচবার বিশ্বের সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। হালেও এ অবস্থার তেমন পরিবর্তন হয়নি তাদের নিজেদের স্বার্থ হাসিল করতে অনিয়ম, দুর্নীতিসহ দেশের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন এদের অতিদ্রুত আইনের আওতায় আনার জন্য তিনি বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধানের কাছে দাবি জানিয়েছেন।
এবিষয়ে জানতে একাধিকবার সাবেক চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমানের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তার মতামত নেওয়া সম্ভব হয়নি।
ভাঙ্গা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমানের যে কোন অনিয়ম দূর্নীতির তথ্য থাকলে আমাদের জানাতে পারেন আপনার পরিচয় গোপনীয়তা রক্ষা করা হবে
মুঠোফোনে: ০১৬১৬ ৭৯০ ৪০৭
ই-মেইল– c-info@Bangladeshtimes24.net